ভারত দক্ষিণ এশিয়ার একটি বৃহত্তম দেশ, যার আয়তন ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিলোমিটার। এটি জনসংখ্যার ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ, যেখানে ১৪০ কোটির বেশি মানুষ বাস করে (২০২৩ অনুযায়ী)। ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং মোট ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। দেশের প্রধান নদীগুলি হল গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা। ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম, যার জিডিপি ৩.৭৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০২৩)। এটি তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলির জন্য পরিচিত, যেমন তাজমহল এবং খাজুরাহো মন্দির।
উপরের ভারতের মানচিত্র দেখুন যেখানে সমস্ত ভারতীয় রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, রাজ্যের রাজধানী এবং জাতীয় রাজধানী প্রদর্শিত হয়েছে। ভারতে মোট ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে।
ভারত দক্ষিণ এশিয়ার একটি বৃহত্তম দেশ, যার মোট আয়তন ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিলোমিটার, যা এটিকে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ, যেখানে ১৪০ কোটির বেশি মানুষ বাস করে (২০২৩ অনুযায়ী)। ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং এটি ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত।
প্রশাসনিক বিভাগ
রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
ভারতে মোট ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব সরকার এবং রাজধানী রয়েছে। যেমন:
রাজ্য: পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল: দিল্লি একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং জাতীয় রাজধানী।
ভাষা
ভারতে ২২টি সাংবিধানিক স্বীকৃত ভাষা এবং ১৬০০-এর বেশি আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহৃত হয়। হিন্দি এবং ইংরেজি দেশের সরকারি ভাষা।
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
প্রধান নদী
ভারতের প্রধান নদীগুলির মধ্যে রয়েছে গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, গোদাবরী এবং নর্মদা। গঙ্গা নদীকে ভারতের প্রাণরূপে বিবেচনা করা হয় এবং এটি ২,৫২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ।
পর্বত ও মরুভূমি
উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূ-প্রকৃতি, যা দেশের জলবায়ু ও নদীগুলিকে প্রভাবিত করে। পশ্চিম ভারতে থার মরুভূমি রাজস্থান রাজ্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
অর্থনীতি
ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম, যার মোট জিডিপি ৩.৭৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০২৩)। এটি কৃষি, শিল্প এবং পরিষেবা খাতের ওপর নির্ভরশীল। দেশের কিছু অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য:
কৃষি: ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদক এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল ও গম উৎপাদক।
শিল্প: তথ্য প্রযুক্তি এবং ওষুধ শিল্পের ক্ষেত্রে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
পরিষেবা খাত: পরিষেবা খাত দেশের জিডিপি-র ৫৫% অবদান রাখে।
পর্যটন
ভারত তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের জন্য পরিচিত। প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে:
তাজমহল (আগ্রা)
হিমালয় পর্বত (উত্তর ভারত)
সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান (পশ্চিমবঙ্গ)
জয়সলমেরের মরুভূমি (রাজস্থান)
২০২২ সালে ভারতে ১.৫ কোটি আন্তর্জাতিক পর্যটক ভ্রমণ করেছেন।
সংস্কৃতি
ভারত তার বৈচিত্র্যময় উৎসব, খাদ্য, সংগীত এবং নৃত্যের জন্য পরিচিত। উৎসবগুলির মধ্যে দীপাবলি, হোলি, ঈদ এবং দুর্গাপূজা বিশেষভাবে উদযাপিত হয়।
ভারতের ইতিহাস
প্রাচীন ইতিহাস
সিন্ধু সভ্যতা (খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০–১৩০০)
ভারতের ইতিহাসের সূচনা হয় সিন্ধু সভ্যতা দিয়ে, যা খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০ থেকে ১৩০০ সালের মধ্যে বর্তমান পাকিস্তান ও পশ্চিম ভারতে বিস্তৃত ছিল। হারাপ্পা ও মহেঞ্জোদারো এই সভ্যতার প্রধান কেন্দ্র। এই সভ্যতা শহর পরিকল্পনা, পাকা সড়ক, ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত।
বৈদিক যুগ (খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০–৬০০)
বৈদিক যুগে ভারতের আর্য সমাজ গঠিত হয়। এই সময় রচিত হয় ঋগ্বেদ, যা বিশ্বের প্রাচীনতম সাহিত্যগুলির মধ্যে একটি। সমাজ ছিল চার বর্ণভিত্তিক এবং অর্থনীতি কৃষি ও গবাদি পশুপালনের ওপর নির্ভরশীল।
মধ্যযুগীয় ইতিহাস
গুপ্ত সাম্রাজ্য (খ্রিস্টপূর্ব ৩২০–৫৫০)
গুপ্ত সাম্রাজ্যকে "ভারতের স্বর্ণযুগ" বলা হয়। এই সময় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্ট শূন্য আবিষ্কার করেন এবং কালিদাসের মতো কবিরা সাহিত্যিক ঐতিহ্য গড়ে তোলেন।
মুসলিম শাসন (১২০৬–১৫২৬)
দিল্লি সালতানাত থেকে শুরু করে মুঘল সাম্রাজ্যের উদয় পর্যন্ত, মুসলিম শাসনের সময় ভারতীয় সংস্কৃতি, স্থাপত্য ও প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। মুঘল সম্রাট আকবর তার ধর্মীয় সহিষ্ণুতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
আধুনিক ইতিহাস
ব্রিটিশ শাসন (১৭৫৭–১৯৪৭)
১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরবর্তীতে ১৮৫৮ সালে সরাসরি ব্রিটিশ রাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশরা ভারতের রেলপথ নির্মাণ ও প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করলেও, এই সময় ভারতের সম্পদ বিদেশে পাচার ও দুর্ভিক্ষ বেড়ে যায়।
স্বাধীনতা আন্দোলন
ভারতের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন ১৯ শতকের শেষ দিকে শুরু হয়। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অহিংস আন্দোলন, ১৯৪২ সালের "ভারত ছাড়ো" আন্দোলন এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্বাধীনতার পর
১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। দেশটি দুটি অংশে বিভক্ত হয়: ভারত এবং পাকিস্তান।
প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও সংবিধান
জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন এবং ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়, যা দেশটিকে একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত করে।
আধুনিক ভারত
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক উদারীকরণের পরে, ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়। বর্তমানে দেশের জিডিপি ৩.৭৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।
অর্জন
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র, যেখানে ৯৪ কোটি ভোটার রয়েছে।
চন্দ্রযান ৩-এর মাধ্যমে ভারত চাঁদে সফল অবতরণকারী চতুর্থ দেশ।
ভারতের ভৌগোলিক বিবরণ
ভূমিকা
ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত এবং এটি ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ। ভারতের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য অত্যন্ত বিস্তৃত, যার মধ্যে রয়েছে পাহাড়, সমতলভূমি, মরুভূমি, নদী এবং উপকূল। এটি উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত।
ভারতের অবস্থান
অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ
ভারত ৮°৪'N থেকে ৩৭°৬'N অক্ষাংশ এবং ৬৮°৭'E থেকে ৯৭°২৫'E দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এটি ভৌগোলিকভাবে উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত।
সীমান্ত
ভারত ৭টি দেশ দ্বারা সীমাবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে:
উত্তরে: চীন, নেপাল, ভূটান
পূর্বে: বাংলাদেশ, মিয়ানমার
পশ্চিমে: পাকিস্তান
ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ১৫,২০০ কিলোমিটার এবং উপকূলরেখা ৭,৫১৬.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ।
ভারতের প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চল
হিমালয় পর্বতমালা
উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা ভারতের প্রাকৃতিক সীমা গঠন করে। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণী এবং ভারতের প্রধান নদীগুলির উৎস।
এভারেস্ট (ভারতের অংশ নয়) হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
কাঞ্চনজঙ্ঘা (৮,৫৮৬ মিটার) ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি
এই অঞ্চলটি ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে উর্বর এলাকা এবং এটি গঙ্গা, যমুনা, এবং ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা সৃষ্ট।
এটি ভারতের খাদ্য উৎপাদনের কেন্দ্র।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
থার মরুভূমি
থার মরুভূমি ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশে রাজস্থানে অবস্থিত। এটি ভারতের সবচেয়ে শুষ্ক অঞ্চল এবং "মরু সভ্যতা"র জন্য পরিচিত।
দক্ষিণের মালভূমি
দাক্ষিণাত্য মালভূমি ভারতের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত এবং এটি বিশ্বের প্রাচীনতম ভৌগোলিক অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি।
এই অঞ্চলটি খনিজ সম্পদের জন্য বিখ্যাত।
গোদাবরী, কৃষ্ণা এবং কাবেরি নদী এখানে প্রবাহিত।
উপকূলীয় অঞ্চল
ভারতের পশ্চিম উপকূল (কঙ্কণ এবং মালাবার উপকূল) এবং পূর্ব উপকূল (করোমন্ডল উপকূল) সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের প্রধান নদী
গঙ্গা
গঙ্গা ভারতের দীর্ঘতম নদী (২,৫২৫ কিলোমিটার) এবং দেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন ও অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত।
ব্রহ্মপুত্র
ব্রহ্মপুত্র নদ ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
নর্মদা ও তাপ্তি
এই নদীগুলি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয় এবং আরব সাগরে মেশে।
আবহাওয়া
ভারতের আবহাওয়া চারটি প্রধান ঋতুর মধ্যে ভাগ করা যায়:
গ্রীষ্ম (মার্চ-জুন)
বর্ষা (জুন-সেপ্টেম্বর)
শরত (অক্টোবর-নভেম্বর)
শীত (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি)
ভারতের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ১,১০০ মিমি, যার বেশিরভাগই বর্ষাকালে হয়।
ভারতের অর্থনীতি
ভূমিকা
ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, যার মোট জিডিপি ৩.৭৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০২৩ অনুযায়ী), যা এটিকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। কৃষি, শিল্প এবং পরিষেবা খাতের ওপর নির্ভর করে ভারত একটি বৈচিত্র্যময় অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলেছে।
ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামো
কৃষি
ভারতের অর্থনীতির একটি প্রধান অংশ কৃষি, যা দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪৬% কর্মসংস্থান যোগায়।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদক এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল ও গম উৎপাদক।
কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে ভারত প্রথম সারির দেশ, বিশেষত মসলা, চা, এবং তুলা।
চ্যালেঞ্জ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
অতিরিক্ত গ্রাউন্ডওয়াটার ব্যবহার এবং মাটির উর্বরতা হ্রাস
শিল্প
ভারতের শিল্প খাত দেশের জিডিপি-র ২৩% অবদান রাখে। এটি ভারী শিল্প থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ পর্যন্ত বিস্তৃত।
স্বয়ংচালিত: ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম গাড়ি উৎপাদক।
ওষুধ: ভারত বিশ্বের ২০% জেনেরিক ওষুধ সরবরাহ করে।
বস্ত্রশিল্প: ভারতের বস্ত্রশিল্প বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম।
চ্যালেঞ্জ
পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব
প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণের অভাব
পরিষেবা খাত
পরিষেবা খাত ভারতের জিডিপি-র সবচেয়ে বড় অংশীদার, যা ৫৫% অবদান রাখে।
তথ্য প্রযুক্তি: ভারত আইটি পরিষেবায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলির মধ্যে একটি। বেঙ্গালুরু "সিলিকন ভ্যালি অফ ইন্ডিয়া" নামে পরিচিত।
পর্যটন: পর্যটন খাত থেকে ২০২২ সালে ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে।
বিনিয়োগ ব্যাংকিং এবং রিয়েল এস্টেট খাতও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
অর্থনৈতিক সংস্কার
১৯৯১ সালের উদারীকরণ
১৯৯১ সালে অর্থনৈতিক উদারীকরণ শুরু হওয়ার পর, ভারত একটি উন্মুক্ত অর্থনীতিতে পরিণত হয়। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণ সহজ করা হয়েছে।
মেক ইন ইন্ডিয়া
"মেক ইন ইন্ডিয়া" উদ্যোগটি ভারতে উৎপাদন খাতকে উন্নীত করার জন্য চালু করা হয়েছিল। এর লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদন খাতে জিডিপি-র ২৫% অবদান নিশ্চিত করা।
রপ্তানি ও বাণিজ্য
ভারত তার প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে:
তেল শোধনজাত পণ্য
যন্ত্রাংশ এবং স্বয়ংচালিত সামগ্রী
তাঁত এবং পোশাক
২০২৩ সালে ভারতের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
চ্যালেঞ্জ
বেকারত্ব এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি
পরিকাঠামোর উন্নয়ন
অর্থনৈতিক বৈষম্য
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
সবুজ শক্তি এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ
গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বৃদ্ধি
ভারতের জনসংখ্যা: একটি বিশদ বিবরণ
ভূমিকা
ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ, যার জনসংখ্যা ১৪০ কোটি (২০২৩ অনুযায়ী)। এটি বৈচিত্র্যময় ভাষা, সংস্কৃতি এবং ধর্মের একটি অনন্য মিশ্রণ। জনসংখ্যার ঘনত্ব, লিঙ্গ অনুপাত, জীবন প্রত্যাশা, এবং শিক্ষার হার ভারতের সামগ্রিক উন্নয়নের সূচক।
ভারতের জনসংখ্যার পরিসংখ্যান
মোট জনসংখ্যা
২০২৩ সালে, ভারতের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৭.৭%।
জনসংখ্যার ঘনত্ব
ভারতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৫২ জন লোক বাস করে। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্বের দেশগুলির মধ্যে একটি।
লিঙ্গ অনুপাত
ভারতে প্রতি ১,০০০ পুরুষের বিপরীতে ১০২০ মহিলা (জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা ৫ অনুযায়ী)। এটি লিঙ্গ বৈষম্য কমানোর দিকে ইতিবাচক পরিবর্তন নির্দেশ করে।
জনসংখ্যার গঠন
বয়স গঠন
০-১৪ বছর: ২৬%
১৫-৬৪ বছর: ৬৭% (কর্মক্ষম জনসংখ্যা)
৬৫ বছর ও তার বেশি: ৭%
ভারত একটি যুবসমাজ, যার গড় বয়স ২৯ বছর।
শিক্ষার হার
ভারতের গড় শিক্ষার হার ৭৭.৭% (২০১১ আদমশুমারি অনুযায়ী)। পুরুষদের শিক্ষার হার ৮৪% এবং নারীদের ৭০%।
ধর্ম
ভারত বিভিন্ন ধর্মের মিশ্রণ:
হিন্দু: ৭৯.৮%
মুসলিম: ১৪.২%
খ্রিস্টান: ২.৩%
শিখ: ১.৭%
অন্যান্য: ২%
ভাষা
ভারতে ২২টি সাংবিধানিক ভাষা এবং ১৬০০+ আঞ্চলিক ভাষা বিদ্যমান। হিন্দি ও ইংরেজি সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আঞ্চলিক বৈচিত্র্য
ভারতের জনসংখ্যা বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত:
উত্তর ভারত: উত্তর প্রদেশ সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য, যেখানে ২৩ কোটি মানুষ বাস করে।
দক্ষিণ ভারত: কেরালা শিক্ষার হার এবং জীবন প্রত্যাশার ক্ষেত্রে শীর্ষে।
পূর্ব ভারত: পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্বের জন্য পরিচিত।
পশ্চিম ভারত: মহারাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কর্মসংস্থান
ভারতের যুবসমাজ কর্মক্ষম জনসংখ্যার একটি বড় অংশ তৈরি করে, যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য একটি সুযোগ।
শহুরীকরণ
ভারতের ৩৫% মানুষ শহর এলাকায় বাস করে। মুম্বাই, দিল্লি, এবং বেঙ্গালুরু প্রধান শহর।
চ্যালেঞ্জ
জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধি, যা প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
বেকারত্ব এবং সামাজিক বৈষম্য।
স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন।